পিয়ালী ঘোষ ( কলকাতা ) : করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতে খাস কলকাতার বুকে ভয়ঙ্কর ঘটনা। ঠাকুরপুকুর থানার অন্তর্গত সত্যনারায়ন পল্লীতে এক ই পরিবারের ৩ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু।
একই পরিবারের তিনজন সদস্যের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী। মৃত দের নাম গোবিন্দ কর্মকার(৮০), স্ত্রী রানু কর্মকার (৭০), ছেলে বুলা কর্মকার(৪৮) । গোবিন্দ কর্মকার স্ত্রী রানু কর্মকার এর কিছুদিন আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন, ছেলে বুলা জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। গোবিন্দ বাবু বেহালার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন যেটি বেশ কয়েক বছর ধরেই বন্ধ হয়ে আছে। গত রবিবার গোবিন্দ বাবুর জ্বর আসে, প্রতিবেশীরা ঠাকুরপুকুর থানায় খবর দিলেন পুলিশের এম্বুলেন্স আসে এবং পরিবারের তিনজনকেই প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়, গোবিন্দ বাবুর জ্বর থাকায় সেখানে ভর্তি নেওয়া হয়নি এরপর আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে গোবিন্দ বাবু জ্বর থাকলেও অন্য দুজনের করোনা সংক্রামনের কোন উপসর্গ না থাকায় তিনজনকেই ভর্তি না নিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর পুলিশের এম্বুলেন্স তাদেরকে বাড়ির সামনে এনে ছেড়ে দেয়। প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা যায় এরপর থেকে গোবিন্দ বাবু ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আজ সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করে কোনো সারা শব্দ না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়, ভেতরে দেখা যায় গোবিন্দ বাবু, তার স্ত্রী ও পুত্র মাটিতে পড়ে আছেন। দেখা যায় পাশেই একটি পাত্রে খানিকটা তরল পদার্থ আছে, পাত্রের গায়ে লেখা রয়েছে মারাত্মক বিষ হইতে সাবধান এবং মেঝেতে চক দিয়ে লেখা রয়েছে সুইসাইড নোট। ঠাকুরপুকুর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে পরিবারের তিনজন সদস্যের দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করে। স্থানীয় প্রতিবেশীদের ক্ষোভ পুলিশ রবিবার দিন জ্বর অবস্থায় গোবিন্দ বাবু কে যখন হাসপাতালে নিয়ে যায়, কেন তাকে কোন কোভিড এর চিকিৎসাধীন হাসপাতালে নিয়ে গেল না। পুলিশ কি জানতো না করোনা সংক্রমনের উপসর্গ দেখা গেলে রোগীকে কোভিডের উপসর্গ পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে? তাদের অভিযোগ পুলিশের অপদার্থতার জন্যই পুরো পরিবারটির এই পরিণতি হলো। তদন্তে লালবাজার গোয়েন্দা দপ্তর ও ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ।